বিশ্ব ফার্নান্দোর লেন্থ বল পয়েন্টে ঠেলে ১ রান পেলেন তামিম ইকবাল। ৯৯ থেকে বাংলাদেশের রান পৌঁছে গেল তিন অঙ্কে। ‘ফিস্ট বাম্প’ করলেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ও মাহমুদুল হাসান জয়।ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে সব সময় গড়বড় অবস্থা। ভালো শুরু যেন স্বপ্নের মতো এক ব্যাপার! উদ্বোধনী জুটি বদলায় বারবার, বদলায় না বাংলাদেশের ভাগ্য।
উদ্বোধনী জুটি নিয়ে তাই হতাশার শেষ নেই বাংলাদেশের। অবশেষে মিললো আলোর ঝলকানি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে শত রানের জুটি পেল বাংলাদেশ।
সবশেষ ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার গলে তমিম ও সৌম্য সরকার ১১৮ রান করেছিলেন। এরপর শুধুই হাহাকার আর হাহাকার। মঙ্গলবার ৭৬ রানে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন তামিম ও জয়। আগের দিন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তোলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। আজও তামিম একই ছন্দে এগোলেও জয় ধীরে ধীরে এগিয়েছেন।
দিনের দ্বিতীয় ওভারে বাঁহাতি পেসার ফার্নান্দো বোলিংয়ে আসেন। গালি দিয়ে পরপর দুই চারে এ বোলারকে স্বাগত জানান তামিম। দৃষ্টিনন্দন দুই শট জুড়ে ছিল প্রবল আত্মবিশ্বাস। দুই ওভার পর অফস্পিনার মেন্ডিসকে কাট করে তামিম পেয়ে যান তার ৩২তম টেস্ট ফিফটি। ওই ওভারের শেষ বলে লেগ সাইডে আলতো টোকায় বাঁহাতি ওপেনার পেয়ে যান আরেকটি বাউন্ডারি। তার ব্যাটেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় দলীয় শতরান।
২০১৭ থেকে ২০২২, ৬১ ইনিংসে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশ খেলিয়েছে মোট ১৫ জুটি। এ সময় শুধু অভিষেকই হয়েছে চারজনের; সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, নাঈম শেখের। জয় ও সাদমান বাদে কেউই পারেননি প্রত্যাশা পূরণ করতে।
এই ৬১ ইনিংসে কেবল দুটিতে বাংলাদেশের রান নব্বই ছাড়িয়েছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের শততম টেস্টে কলম্বোতে তামিম ও সৌম্য ৯৫ করেছিলেন। সবশেষ ২০২১ সালে পাল্লাকেল্লেতে সাইফ ও তামিমের রান ছিল ৯৮। এছাড়া ৬১ ইনিংসে ফিফটি প্লাস জুটি ছিল মাত্র ১১টি। এছাড়া উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরা দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছানোর আগেই আউট হয়েছেন ২১ ইনিংসে। কল্পনা করা যায়?
দুই শতরানের জুটির মাঝে তামিম-সৌম্য সর্বোচ্চ ৯ ইনিংস খেলেছেন। তাদের রানটাও সবচেয়ে বেশি। ৩২১ রান পেয়েছেন যেখানে পঞ্চাশের বেশি রান পেয়েছেন তিনবার। এছাড়া ইমরুল-লিটন ৫, ইমরুল-তামিম ৫, ইমরুল-সৌম্য ৪, লিটন-তামিম ৪, সাদমান-সৌম্য ২, সাদমান-তামিম ৬, লিটন-সাদমান ১, ইমরুল-সাদমান ৪, সাইফ-তামিম ৭, সাইফ-সাদমান ৪, জয়-সাদমান ৫, শান্ত-সাদমান ১, নাঈম-সাদমান ২ ও জয়-তামিম ২ ইনিংসে জুটি বেঁধেছিলেন।
১০ ওভারে সর্বোচ্চ রান দেওয়ার রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ান বোলার মিক লুইসের। ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রানের ম্যাচের কথা সেটা। প্রথমে ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ৪৩৪ রান। সেই রান দ্বিতীয় ইনিংসে ১ বল হাতে রেখেই টপকে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেদিন অস্ট্রেলিয়ার বলির পাঁঠা হয়েছিলেন মিক লুইস। ১০ ওভারে ১৩ চার আর ৪ ছক্কা হজম করে ১১৩ রান দিয়েছিলেন তিনি। সেই ম্যাচের পর অজি দলে ঢোকার রাস্তা পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তবে সেদিনের সে রেকর্ড এখনো অক্ষুণ্ন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।